হাইড্রোজেন বোমা,বর্তমান বিশ্বের শক্তি আর ধ্বংসের মাত্রার হিসেবে সবচেয়ে বিধ্বংসী বোমা।এটিকে মূলত ২য় প্রজন্মের পারমাণবিক বোমা বলা হয়। হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণে নিমেষে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে কয়েকটি বড় শহর।তাছাড়া রেডিয়েশন ত আছেই!!এর চেয়ে শক্তিশালী বোমা বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই। অবশ্য ধ্বংস ক্ষমতা নির্ভর করে মেগাটনের ওপর।হাইড্রোজেন বোমা কতটা শক্তিশালী ??
যে দেশগুলোর কাছে হাইড্রোজেন বোমা রয়েছেঃ
বর্তমানে হাইড্রোজেন বোমার অধিকারী দেশগুলো হলঃ
১.মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
২.চীন
৩.রাশিয়া
৪.ফ্রান্স
৫.যুক্তরাজ্য
৬.ভারত
উত্তর কোরিয়াও হাইড্রোজেন বোমার সফল পরীক্ষা চালিয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে।তবে বিষয়টি এখনও বিতর্কিতই রয়ে গেছে।
প্রথমে কোন দেশ বোমাটি বানিয়েছিলোঃ
১৯৫২ সালে বিশ্বের প্রথম হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায় যুক্তরাষ্ট্র।
এর বিধ্বংসী ক্ষমতা ছিল ১ কোটি টন ট্রাইনাইট্রো টলুইনের (টিএনটি) সমান।
তাহলে হাইড্রোজেন বোমা কতটা শক্তিশালী ??
এখন হাইড্রোজেন বোমার ক্ষমতা বোঝার জন্য আমরা জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বিস্ফোরিত পারমাণবিক বোমা যথাক্রমে ‘লিটল বয়’ ও ‘ফ্যাটম্যান’ এর শক্তির উল্লেখ করতে পারি।
‘লিটল বয়ের’ বিধ্বংসী ক্ষমতা ছিল ১৫ হাজার টন টিএনটির সমান। আর ফ্যাটম্যানের বিধ্বংসী ক্ষমতা ছিল ২০ হাজার টন টিএনটির সমান।
ধ্বংসক্ষমতাঃ
এখন আসি ধ্বংস ক্ষমতা সম্পর্কে।আমি যদি এখন বলি ১কোটি টন টিএনটি তে ১০০ টি হিরোসিমার মত শহর ধব্বংস হয়ে যাবে??আসলে তা নয়।
পারমাণবিক বোমার ধব্বংস ক্ষমতা নির্ভর করে আবহাওয়া,রেডিয়েশন অনেক জিনিসের ওপর নির্ভর করে।
এছাড়া ঐ অঞ্চলের বায়ুর চাপ, তাপমাত্রা, ঘনত্ব, ভৌগলিক পরিবেশ ইত্যাদির উপরেও নির্ভরশীল।সেজন্য এলাকাভেদে ক্ষতির পরিমাণও ভিন্ন হবে।
বোমাটির কর্মকৌশলঃ
হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করা খুবই জটিল বিষয়। তবে মোটা দাগে বলতে গেলে এই বোমা তৈরির মূল ভিত্তি পরমাণুর ফিউশন প্রক্রিয়া ফিউশন হলো- দুটি পরমাণু একীভূত হয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি শক্তি সঞ্চয় করা।
তবে হাইড্রোজেন বোমা তৈরির বর্তমান ধারণায় ফিউশন ও
ফিশন দুই প্রক্রিয়াই কাজে লাগানো হয়।ফিশন হলো একটি পরমাণু দুই বা ততোধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়া।
এই প্রক্রিয়ায় পারমাণবিক বোমা তৈরি করা হয়। আর ফিউশন ও ফিশন প্রক্রিয়া কাজে লাগিয়ে যে বোমা তৈরি করা হয়, তাকে বলা হয় থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা বা হাইড্রোজেন বোমা।
আমি যদি জার বোম্বার বা টিসার বোমের কথা বলি,এটি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় থার্মো নিউক্লিয়ার বোম্ব।
জার বোম্ব ছিল ২৭ মেট্রিক টন ওজনের আর ৮মিটার দীর্ঘ,২.১ মিটার উঁচু। মানে একটা হাতির সমান।
এটি ছিল ৫৬ মেগাটন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি হাইড্রোজেন বোমা।এটি ছিল তৃতীয় স্তরের একটি হাইড্রোজেন বোমা।এরকম মোট তিনটি বোমা তৈরি করা হয়েছিল।একটি পরীক্ষার জন্য,একটি তাদের অস্ত্র ভান্ডারে রয়েছে এবং বাকিটি খেলনা বোমা।
এটার ব্লাস্ট রেডিয়াস বা ব্লাস্ট ইয়েল্ড সম্পর্কেও বিভিন্ন মতামত রয়েছে তাই সঠিক কোনটা সেটা ঠিকভাবে বলা সম্ভব নয় আর লেটেস্ট হিসাব অনুযায়ী এটির দ্বারা সৃষ্ট মাশরুম ক্লাউডের উচ্চতা ছিল ৯৬ কিলোমিটার।
আর যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী তাদের একটা স্পাই প্লেন ঐ এলাকায় ছিল এবং ২৫০+ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায়ও সেটির বাইরের অংশ ঝলসে গিয়েছিল।বিস্ফোরনের পর এটার অগ্নি গোলকের ব্যাসার্ধ ছিল ৯৫ কিলোমিটার।
এই বোমা ফাটলে ১০০ কিলোমিটার দূরের লোকের শরীর থার্ড ডিগ্রী বার্ন হবে।
যদি এই বোমা কোন শহরে নিক্ষেপ করলে ৩০০ কিঃমিঃ ব্যাসার্ধের এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হবে রেডিয়েশন সহ।
তাছাড়া আরো অনেক বিপুল ব্যাসার্ধের এলাকা পূর্ন রেডিয়েশনে আক্রান্ত হবে।
এটা যদি ২০,০০০ ফুটে এয়ার বাস্ট মোডে নিউ ইয়র্ক সিটিতে নিক্ষেপ করে,তাহলে নিউ ইয়ার্ক সিটি স্রেফ ইট পাথরের জঙ্গল হয়ে যাবে।।
আরও পড়ুনঃ কোন দেশের কাছে কতটি সাবমেরিন রয়েছে??