সুস্থ থাকতে কে না চায়!!আদিমকাল থেকেই মানুষ সুস্থ থাকার জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে খ্রীস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দে ভারতে প্রচলিত হয় যোগব্যায়ামের।সুস্থ শরীরের জন্য প্রয়োজন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি।দেশের ইম্যুউনিটি সিস্টেম বৃদ্ধি ভাইরাস,ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য অণুজীব শরীরে সহজে বাসা বাঁধতে পারেনা।ফলে আমরা সুস্থ-সবল পারি।
আসুুন আজ জেনে নেই আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কিছু উপায়ঃ
১.ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার খানঃ
প্রাত্যহিক জীবণে ভাইরাল রোগের থেকে বাঁচতে ভিটামিন-সি এর বিকল্প নেই।
ভিটামিন-সি শরীরে তাপ সৃষ্টি করে শরীরের জীবাণু ধ্বংস করে দেয়,বৃদ্ধি করে রোগ-প্রতিরোধক্ষমতা।
ভিটামিনটি পানিতে দ্রবণীয় হওয়ায়,এটি শরীরে জমা থাকেনা,আমাদের প্রসাবের সাথে দৈনিক বের হয়ে যায়।এজন্য আমাদের প্রতিদিন ভিটামিন-সি গ্রহণ করতে হবে।
প্রায় সকল সাইট্রাস ও টকজাতীয় ফলে ভিটামিন-সি থাকে।লেবু,আমলকি,আপেল,মাল্টা,পেয়ারা,কমলা ভিটামিন-সি এর প্রধান উৎস।
২.দুগ্ধজাতীয় খাবার খানঃ
দুগ্ধজাতীয় খাবারকে বিজ্ঞানের ভাষায় প্রোবায়োটিক বলে।মানুষের পাকস্থলীতে কিছু আবরণ থাকে,সেখানে কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে যা শরীরের আক্রমণকারী জীবাণুকে ধ্বংস করে।
প্রোবায়োটিকস খাবারগুলো এসব উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে।দই,ছানা,মাঠা,বাটার উল্লেখযোগ্য প্রোবায়োটিক খাবার।
৩.নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুনঃ
নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীরের মাংসপেশি ও হৃদযন্ত্র অনেক কার্যকরী হয়।শরীরের প্রতিটি কোষে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।ফলে রোগ-প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটবেন।এটি আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করবে ও শরীরকে চাঙ্গা রাখবে।
৪. ভাত কম খাবেন,প্রোটিন ও সবজি বেশী খাবেনঃ
আমাদের দৈনন্দিন খাবারে ৬০% কার্বোহাইড্রেট,৩০% প্রোটিন ও ৫% ফ্যাট থাকা উচিত।
অতিরিক্ত ভাত বা কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করলে তা শরীরে ঢোকার পর ফ্যাটে রুপান্তরিত হয়।অতিরিক্ত ফ্যাট শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
নিয়মিত প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে শরীরের ইম্যুনিটি বাড়ে।
শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন যা শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।ডিম,মাছ,মাংস,লাল-মাংস,কলিজা প্রোটিনের সহজলভ্য উৎস।
৫.দৈনিক ৩-৪ লিটার পানি পান করুনঃ
আমাদের দেহের প্রায় ৭০% ই পানি।পানি আমাদের শরীরের বিপাকীয় কাজে সহায়তা করে।
শরীরের বিষাক্ত উপাদানগুলো মুত্রের মাধ্যমে বের করে দিতে সাহায্য করে পানি সাহায্য।ফলে শরীর সতেজ থাকে,কোনো রোগ-ব্যাধি বাসা বাঁধতে পারেনা।
৬.নিয়মিত আদা খানঃ
আদাতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ পদার্থ থাকে,যা দৈনন্দিন ভাইরাসঘটিত রোগের সাথে লড়াই করতে সহায়তা করে।
এক্ষেত্রে আদার চা ও খেতে পারেন।
৭.শরীরে রোদ লাগানঃ
ভিটামিন-ডি আমাদের শরীরের ইম্যুনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।ভিটামিনটির প্রাকৃতিক ও সবচেয়ে সহজলভ্য উৎস হলো সূর্য।
দৈনিক অন্তত শরীরে ১৫-২০ মিনিট শরীরে রোদ লাগান,ভিটামিন-ডি এর অভাব পূরণ হয়ে যাবে।
এছাড়া এটি আমাদের হাড়কেও শক্তিশালী রাখে।
ডিমের কুসুম,মাছের তেল,গরুর কলিজাতেও ভিটামিন-ডি থাকে।
৮.মানসিক চাপমুক্ত থাকুনঃ
অতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দূর্বল করে ফেলে।তাই সুস্থ থাকতে সবসময় মানসিক চাপমুক্ত থাকুন।
ইবাদত করুন,বই পড়ুন অথবা মুভি দেখুন।মানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকতে নিয়মিত মেডিটেশন করুন।
৯.দৈনিক আটঘন্টা ঘুমানঃ
দৈনিক আটঘন্টা ঘুম আমাদের ক্লান্ত শরীরকে দেয় বিশ্রাম,করে মানসিকভাবে সুস্থ ও চিন্তামুক্ত।ফলে শরীরের ইম্যুনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে প্রতিদিন পরিমিত ঘুমের বিকল্প নেই।
১০.জিংকজাতীয় খাবার খানঃ
সর্দি-জ্বর বা ভাইরাসঘটিত রোগ থেকে বাঁচতে জিংকের গুরুত্ব অপরিসীম।শরীরের এনজাইমের একটিভিটি বাড়াতে জিংকের বিকল্প নেই।
সবুজ শাকসবজি,গমের রুটি,শিম,দুধ,বাদাম,সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে জিংক থাকে।
এছাড়া বাজারে জিংক সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও পাওয়া যায়।