বলা হয়ে থাকে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড।একটি জাতির উন্নতিতে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশের শিক্ষার হার ছিলো মাত্র ১৬.৮%।
১৯৭২ সালে দেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিলো ৭৭৯১ টি,যা বর্তমানে ২০৮৪৯ টি।
কলেজ ছিলো ৫২৬ টি,বর্তমানে ৪৬৯৯ টি।
বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো মাত্র ৬ টি,যা বর্তমানে বেড়ে ১৫৮ টি।
সর্বশেষ আদমশুমারী-২০২২ অনুযায়ী দেশে স্বাক্ষরতার হার ৭৪.৬৬%।
এরমধ্যে পুরুষ ৭৬.৫৬%,নারী ৭২.৮২%।
শিক্ষার হার সবচেয়ে বেশী বরিশাল বিভাগে,আর সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে।
জেলা হিসেবে শিক্ষার হার সবচেয়ে বেশী পিরোজপুরে,সবচেয়ে কম জামালপুর জেলায়।
চলুন আজ জেনে নেই,বাংলাদেশের শিক্ষার হার বেশী যেজেলাগুলোতে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
১.পিরোজপুরঃ (৮৫.৪১%)
বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত পিরোজপুর জেলার আয়তন ১২৭৭.৮০ বর্গ কি.মি।জনসংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষ।
উপকূলীয় এ জেলাটির উপজেলা রয়েছে ৭ টি,পৌরসভা ৩ টি,ইউনিয়ন ৫২ টি,গ্রাম ৬৪৮ টি।
সম্রাট আকবরের দ্বিতীয় পুত্র সুবেদার শাহ সুজার পুত্র ফিরোজ শাহ এ এলাকাতে মারা যান।তার স্মৃতি রক্ষায় এলাকাটির নামকরণ করা হয় “ফিরোজপুর”। পরে সেটি লোকমুখে বিকৃত হয়ে হয়ে ” পিরোজপুর” নাম হয়েছে।
পিরোজপুরে শিক্ষার হার ৮৫.৪১%,এরমধ্যে পুরুষ ৮৫.৮৮%,নারী ৮৪.৯৭%।
সরকারি হিসেবে পিরোজপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯৫৫ টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৬৯ টি,মাদ্রাসা ৩৮৮ টি,স্কুল & কলেজ ৮ টি,কলেজ ৪২ টি,আইন কলেজ ১ টি,কারিগরী কলেজ ১৭ টি,টিচাররট্রেনিং কলেজ ৩ টি,কৃষি কলেজ ২ টি,এটিআই ১ টি,কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ৫ টি।
বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া (সাংবাদিক),শহীদ নূর হোসেন (৯০ এর স্বৈরাচার আন্দোলনের শহীদ),হাশেম আলী খান(হক মন্ত্রীসভার কৃষিমন্ত্রী),আনিস মোল্লা (বীরবিক্রম),মেহেদী ইমাম (বীরবিক্রম),শাহরিয়ার নাফিস(ক্রিকেটার),খালিদ হাসান মিলু (সংগীতশিল্পী) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
২.ঢাকাঃ (৮৪.৬৮%)
বাংলাদেশের শিক্ষিত জেলাগুলোর মধ্যে ২য় অবস্থানে ঢাকা জেলা।বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এজেলাতেই অবস্থিত।
ঢাকা জেলার আয়তন ১৪৬৩.৬০ বর্গ কি.মি।জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ।
এর উপজেলার সংখ্যা ৫টি,পৌরসভা ৩ টি,সিটি কর্পোরেশন ২ টি,ইউনিয়ন ৭৯ টি,থানা ৪১ টি,গ্রাম ১৬৭৬ টি।
ঢাকার নামকরণ নিয়ে মতভেদ আছে।প্রথম মতবাদে,রাজা বল্লাল সেন ঢাকাতে ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।এ মন্দির থেকেই ঢাকা নামের উৎপত্তি।
আরেকটি মতবাদ হলোঃ ঢাকা মোগল আমলে সুবা বাংলার প্রথম রাজধানী কয়।তখন সম্রাট জাহাঙ্গীরের নামে এর নাম রাখা হয় জাহাঙ্গীরনগর।সে আনন্দে সুবাদার ইসলাম খান রাজধানীর সব জায়গায় ঢাক বাজিয়ে এটি প্রকাশ করার নির্দেশ দেন।এটি লোকমুখে কিংবদন্তী রুপ নেয় আর ঢাকা নামটি পরিচিতি লাভ করে।
ঢাকার শিক্ষার হার ৮৪.৬৮%।পুরুষের হার ৮৬.২৩%,নারী ৮২.৮৬%।
রাজধানী শহর হওয়ায় শহরটিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বেশী।
ঢাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৭০০ টি,মাধ্যমিক ৬০৬ টি,মাদ্রাসা ১১৫ টি,স্কুল & কলেজ ১৫২ টি,কলেজ ২১৫ টি,বিশ্ববিদ্যালয় ৫৯ টি (পাবলিক ৭ টি),মেডিকেল কলেজ ৩৮ টি (সরকারি ৪ টি),ডেন্টাল কলেজ ১৭ টি (সরকারি ১ টি),কারিগরি কলেজ ১৯ টি,টিচর্স ট্রেনিং কলেজ ৯ টি,আয়ুর্বেদিক কলেজ ১ টি,আইন কলেজ ১৬ টি,হোমিওপ্যাথিক কলেজ ৩ টি,গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ২ টি,শারীরিক শিক্ষা কলেজ ১ টি,টেক্সটাইল কলেজ ১ টি,সংগীত কলেজ ১ টি,পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ৯ টি,কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ৩৬ টি।
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে নবাব আহসানউল্লাহ,নবাব সলিমুল্লাহ,নবাব আব্দুল গণি,কবি শামসুর রহমান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
৩.ঝালকাঠিঃ(৮৩.০৮%)
বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত ঝালকাঠি জেলার আয়তন ৭৪৮.৩২ বর্গ কি.মি।আয়তনে এটি দেশের ৩য় ক্ষুদ্রতম জেলা।জনসংখ্যা ৬ লক্ষ ৭০ হাজার।
উপজেলার সংখ্যা ৪ টি,পৌরসভা ২ টি,ইউনিয়ন ৩২ টি,গ্রাম ৪৭১ টি।
প্রাচীনকালে কৈবর্ত জেলেরা এঅঞ্চলে প্রথম বসতি স্থাপন করে।এসব জেলেকে স্থানীয়ভাবে “ঝালো” বলা হতো।এরা এখানকার ঘন জঙ্গল কেটে বসতি স্থাপন করে।
ধারণা করা হয় জেলেদের “ঝালো” ও জঙ্গল কেটে বাস করাই সেখান থেকে “কাটি” শব্দটি থেকে পরবর্তীতে “ঝালকাঠি” নামটির উৎপত্তি।
জেলার শিক্ষার হার ৮৩.০৮%,এরমধ্যে পুরুষ ৮৪.০১%,নারী ৮২..২৫%।
ঝালকাঠিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৮৪ টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯২ টি,মাদ্রাসা ১২৩ টি,স্কুল & কলেজ ৮ টি,কলেজ ২০ টি,টেকনিক্যাল কলেজ ৯ টি,কৃষি কলেজ ১ টি,কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ৩ টি,পলিটেকনিক ১ টি।জেলাটিতে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজ নেই।
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কামিনী রায় (কবি),জীবনানন্দ দাশ (কবি),আযীযুর রহমান কায়েদ (ইসলামী চিন্তাবিদ),শামসুদ্দিন আবুল কালাম (কবি) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
৪.বাগেরহাটঃ (৮১.৩২%)
সুন্দরবনের কোলঘেঁষা খুলনা বিভাগের অন্যতম বড় একটি জেলা বাগেরহাট।
আয়তন ৩৯৫৯.১১ বর্গ কি.মি,এরমধ্যে বনাঞ্চল ১৮৩৪.৭৪ বর্গ কি.মি।জনসংখ্যা ১৬ লক্ষ ১০ হাজার।
উপকূলীয় জেলাটিতে উপজেলা রয়েছে ৯ টি,পৌরসভা,ইউনিয়ন ৭৯ টি,গ্রাম ১০৪৭ টি।
বাগেরহাট শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদীর উত্তরদিকে হাড়িখালী থেকে নাগেরবাজার পর্যন্ত যে লম্বা বাঁক অবস্থিত,সে বাঁকের পুরাতন বাজার এলাকায় পূর্বে একটি হাঁট বসতো।একে বাঁকের হাট বলা হতো।পরবর্তীতে লোকমুখে বিকৃত হয়ে সেটিই “বাগেরহাট” নাম হয়েছে।
বিখ্যাত ষাটগম্বুজ মসজিদ বাগেরহাটেই অবস্থিত।
বাগেরহাটে শিক্ষার হার ৮১.৩২%।পুরুষ শিক্ষার হার ৮২.৩৮%,নারী ৮০.২৯%।
জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০৯০ টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৩০ টি,মাদ্রাসা ২৪৫ টি,স্কুল & কলেজ ৭ টি,কারিগরি কলেজ ২০ টি,টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ২ টি,হোমিওপ্যাথিক কলেজ ১ টি,আইন কলেজ ১ টি,শারীরিক শিক্ষা কলেজ ১ টি,কৃষি কলেজ ২ টি,ম্যাটস ১ টি,পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ১ টি,কারিগরি ইন্সটিটিউট ১১ টি।জেলায় কোনো মেডিকেল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় নেই।
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ (কবি),আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ (শিক্ষাবিদ),নীলিমা ইব্রাহীম (সাহিত্যিক),মতিউর রহমান মল্লিক (কবি),হালিমা খাতুন (ভাষাসৈনিক),লিয়াকত আলী খান (বীরবিক্রম),খিজির আলী (বীরবিক্রম),মোহাম্মদ হোসেন (বীরপ্রতীক),এনামুল হক (বীরপ্রতীক),রুবেল হোসেন (ক্রিকেটার),আব্দুর রাজ্জাক (ক্রিকেটার) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দশটি নদীর তালিকা।
৫.গাজীপুরঃ (৮১.২৫%)
বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের জেলা গাজীপুরের আয়তন ১৮০৬.৩৬ বর্গ কি.মি।এরমধ্যে ২৭৩.৪২ বর্গ কি.মি বনভূমি।জনসংখ্যা প্রায় ৫১ লক্ষ ৫০ হাজার।
ভাওয়াল অঞ্চলে অবস্থিত জেলাটির উপজেলা ৫ টি,পৌরসভা ৩ টি,সিটি কর্পোরেশন ১ ট, ইউনিয়ন ৪৭ টি,গ্রাম ১৩৩০ টি।
গাজীপুর নামকরণে ২ টি মতবাদ আছে
।প্রথমটি হল,মুহাম্মদ বিন তুঘলকের আমলে এ অঞ্চলে গাজী নামের এক কুস্তিগীর বাস করতো।তার নামানুসারে এলাকার নাম হয় গাজীপুর।
আরেকটি মতবাদ হল,সম্রাট আকবরের সেনাপতি ঈসা খাঁ র ছেলে ফজল গাজী এ এলাকা শাসন করতো।তার নামে এলাকাটির নাম রাখা হয় গাজীপুর।
গাজীপুরে শিক্ষার হার ৮১.২৫%,এরমধ্যে পুরুষ ৮৩.৮৬%,নারী ৭৮.৮৬%।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৭৬ টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৯৯ টি,মাদ্রাসা ১৭৭ টি,কলেজ ৭০ টি,স্কুল & কলেজ ৩৫ টি,বিশ্ববিদ্যালয় ৬ টি (৫ টি পাবলিক),মেডিকেল কলেজ ১ টি,কারিগরি কলেজ ১০ টি,টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ২ টি,হোমিওপ্যাথিক কলেজ ১ টি,গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ১ টি,আইন কলেজ ১ টি,নার্সিং কলেজ ১ টি,কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ৩ টি,পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ১ টি,কারবগরি ইন্সটিটিউট ১০ টি,কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ৪ টি।
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে মেঘনাদ সাহা (বিজ্ঞানী),তাজউদ্দীন আহমেদ (বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী),গোবিন্দ দাস (কবি),রাজেন্দ্র নারায়ন চৌধুরী (জমিদার),নরেন্দ্র নারায়ন চৌধুরী (বলধা গার্ডেনের প্রতিষ্ঠাতা) উল্লেখযোগ্য।
৬.চট্টগ্রামঃ (৮০.৮৫%)
বাংলাদেশের বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের আয়তন ৫২৮২.৯২ বর্গ কি.মি।জনসংখ্যা ৮৮ লক্ষ ৬৫ হাজার।
আয়তনে এটি দেশের ২য় বৃহত্তম জেলা।বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত প্রথম জেলাও হল চট্টগ্রাম (১৬৬৬ সালে)।
এর উপজেলা সংখ্যা ১৫ টি,পৌরসভা ১৫ টি,সিটি কর্পোরেশন ১ টি,ইউনিয়ন ১৯০ টি,গ্রাম ১২৬৭ টি।
চট্টগ্রাম নামের উৎপত্তি নিযে মতভেদ রয়েছে।
একসময় এলাকাটি ঘনজঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিলো ও সেখানে জ্বীনের উপদ্রব ছিলো।
তৎকালীন সময়ে ইসলাম প্রচার করতে ১২ জন আউলিয়া এ এলাকাটিতে আসেন।তারা একটি বড় চেরাগ বা বাতি (যেটাকে স্থানীয় ভাষায় চাঁটি বলে) জ্বালিয়ে একটি উঁচু জায়গায় স্থাপন করেন।
এই বাতির আলো যতদূর পড়েছিলো ততদূর পর্যন্ত জ্বীনেরা পালিয়ে যায়।ফলে বসবাসের উপযোগী গ্রাম(যাকে স্থানীয় ভাষায় গাঁ/গাঁও বলে)প্রতিষ্ঠিত হয়।
সেই চাঁটি ও গাঁও থেকে “চাঁটিগাও” বা চট্টগ্রামের উৎপত্তি।
চট্টগ্রামে শিক্ষার হার ৮০.৮৫%,এর মধ্যে পুরুষ ৮২.৬৬%,নারী ৭৯.০৭%।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৮৪৭ টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৯৭ টি,মাদ্রাসা ৩৪৬ টি,স্কুল & কলেজ ৮২ টি,কলেজ ১২৭ টি,বিশ্ববিদ্যালয় ১১ টি,মেডিকেল কলেজ ২ টি,আয়ুর্বেদিক কলেজ ৩ টি,গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ১ টি,ক্যাডেট কলেজ ১ টি,কারিগরি কলেজ ৯ টি,টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ৫ টি,কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ১ টি,পলিটেকনিক ৪ টি,কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ৯ টি,সংগীত কলেজ ২ টি।
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্য আহমেদ ছফা (সাহিত্যিক),সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ (সাহিত্যিক),মাস্টার দ্যা সূর্যসেন (বিপ্লবী),প্রীতিলতা (বিপ্লবী),আব্দুল হক (বীরবিক্রম),সিরাজুল হক(বীরপ্রতীক),দিদারুল আলম (বীরপ্রতীক),আবুল কাশেম (ভাষাসৈনিক),কোরেশী মাগন ঠাকুর (মধ্যযুগের কবি),আলাওল (মধ্যযুগের মহাকবি),দৌলত উজির বাহরাম খান (মধ্যযুগের কবি),সাবিরিদ খান (মধ্যযুগের কবি),শাহ মুহাম্মদ সগীর (মধ্যযুগের কবি),মিনহাজুল আবেদীন নান্নু (ক্রিকেটার),আকরাম খান (ক্রিকেটার),তামিম ইকবাল (ক্রিকেটার),আফতাব আহমেদ (ক্রিকেটার),শাবানা (অভিনেত্রী),কবরী (অভিনেত্রী),আইয়ুব বাচ্চু (সংগীতশিল্পী) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
৭.ফেনীঃ (৮০.৫৯%)
চট্টগ্রাম বিভাগের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম জেলা ফেনীর আয়তন ৯২৮.৩৪ বর্গ কি.মি।জনসংখ্যা ১৬ লক্ষ ২৫ হাজার।
ফেনীর উপজেলা সংখ্যা ৬ টি,পৌরসভা ৫ টি,ইউনিয়ন ৪৩ টি,গ্রাম ৫৬৪ টি।
এই জেলা দিয়ে প্রবাহিত ফেনী নদীর নামানুসারে এ জেলার নামকরণ করা হয় ফেনী।
ফেনীর শিক্ষার হার ৮০.৫৯%।এরমধ্যে পুরুষ ৮২.৩৭%,নারী ৭৭.৬০%।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৬০ টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯৭ টি,মাদ্রাসা ১২৪ টি,স্কুল & কলেজ ৯ টি,কলেজ ২৭ টি,কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ৫ টি,পলিটেকনিক ৩ টি,টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ২ টি,নার্সিং ইন্সটিটিউট ১ টি,ক্যাডেট কলেজ ১ টি,বিশ্ববিদ্যালয় ১ টি।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ফেনীর অবদান অপরিসীম।মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য এ জেলা থেকে ৪ জন বীরউত্তম,৭ জন বীরবিক্রম ও ২০ জন বীরপ্রতীক প্রাপ্ত হন।
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে আব্দুস সালাম (শহীদ ভাষাসৈনিক),গাজীউল হক (ভাষাসৈনিক),জহির রায়হান (চলচ্চিত্রকার),শহীদুল্লাহ কায়সার (শহীদ বুদ্ধিজীবী),সেলিনা পারভীন (শহীদ বুদ্ধিজীবী),সেলিম আল দ্বীন (সাহিত্যিক),এ.এফ.রহমান (ঢাবির প্রথম বাঙালি ভিসি),শমসের আলী (বিপ্লবী),কাইয়ুম চৌধুরী (চিত্রশিল্পী),ওয়াসফিয়া নাজরীন (এভারেস্ট বিজয়ী),মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন (ক্রিকেটার) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
৮.খুলনাঃ (৮০.৫৬%)
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শহর ও জেলা খুলনার আয়তন ৪৩৯৪.৩৬ বর্গ কি.মি।জনসংখ্যা ২৫ লক্ষ ৫০ হাজার।
খুলনার উপজেলা ৯ টি,সিটি কর্পোরেশন ১ টি,পৌরসভা ২ টি,ইউনিয়ন ৬৮ টি,গ্রাম ১১০৬ টি।
প্রাচীনকালে এক ধনপতি সওদাগর তার স্ত্রী খুল্লনা র নামে খুলনায় খুল্লনেশ্বরী কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।সেখান থেকেই খুলনা নামের উৎপত্তি।
খুলনার শিক্ষার হার ৮০.৫৬%।এরমধ্যে পুরুষ ৮৩.৫০%,নারী ৭৭.৬০%।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১৫৯ টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪০৪ টি,মাদ্রাসা ১৩৪ টি,স্কুল & কলেজ ২৭ টি,কলেজ ৭৫ টি,বিশ্ববিদ্যালয় ৪ টি,মেডিকেল কলেজ ৪ টি,কারিগরি কলেজ ১৫ টি,টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ৫ টি,কৃষি কলেজ ১ টি,হোমিওপ্যাথিক কলেজ ১ টি,শারীরিক শিক্ষা কলেজ ১ টি,গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ১ টি,ইউনানি কলেজ ১ টি,প্যারামেডিক্যাল ১ টি,মেডিকেল ইন্সটিটিউট ৪ টি,কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ১ টি,কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ২৯ টি,পলিটেকনিক ৭ টি।
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে আচার্য্য প্রফুল্ল রায় (বিজ্ঞানী),মৃণালিনী দেবী (রবি ঠাকুরের বউ),অতুল সেন (বিপ্লবী),রসিকলাল দাস (বিপ্লবী),আব্দুল গাফপার হাওলাদার (বীরউত্তম),তানভীর মোকাম্মেল (চলচ্চিত্রকার),ওমর সানি(অভিনেতা),মৌসুমী (অভিনেত্রী),পপি(অভিনেত্রী),সালাম মুর্দেশী (ফুটবলার),নাহিদুল ইসলাম (ক্রিকেটার),মানজারুল ইসলাম (ক্রিকেটার),জিয়াউর রহমান (ক্রিকেটার),মেহেদী হাসান মিরাজ (ক্নিকেটার),সালমা (ক্রিকেটার),শুকতারা (ক্রিকেটার),জাহানারা (ক্রিকেটার),আয়েশা (ক্রিকেটার),নুরুল হাসান সোহান (ক্রিকেটার) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুনঃ আয়তনে বাংলাদেশের বড় দশটি উপজেলা!!
৯.বরগুনাঃ (৮০.৪৯%)
উপকূলীয় জেলা বরগুনা বরিশাল বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এর আয়তন ১৮৩১.৩১ বর্গ কি.মি।জনসংখ্যা ১০ লাখ ১৫ হাজার।
বরগুনার উপজেলা ৬ টি,পৌরসভা ৪ টি,ইউনিয়ন ৪২ টি,গ্রাম সংখ্যা ৫৯৩ টি।
কিংবদন্তি আছে,একময় উত্তরবঙ্গের কাঠ ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চল থেকে কাঠ নিয়ে যাওয়ার সময় খরস্রোতা খাকদোন নদী অতিক্রম করতে হতো।
এ নদী অতিক্রমকালে অনুকূল স্রোত বা বড় জোয়ারের জন্য এ জায়গাটিতে অপেক্ষা করতো।
বড় জোয়ারকে স্থানীয় ভাষায় “বড়গোনা” বলা হতো।সেখান থেকে বরগুনা নামের উৎপত্তি।
বরগুনার শিক্ষার হার ৮০.৪৯%,এরমধ্যে পুরুষ ৮২.১০%,নারী ৭৮.৯৬%।
জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৮০১ টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭৪ টি,মাদ্রাসা ৩৫৯ টি,স্কুল & কলেজ ১১ টি,কলেজ ২৫ টি,কারিগরি কলেজ ৮ টি,টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ১ টি,কৃষি কলেজ ১ টি,কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট ২ টি,পলিটেকনিক ১ টি,তারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ২ টি।জেলাটিতে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজ নেই।
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সৈয়দ জিয়াউল আহসান (যুক্তফ্রন্ট সরকারের স্পীকার),মীর সাব্বির (অভিনেতা),মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান (ঢাবির সাবেক ভিসি) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
১০.গোপালগঞ্জঃ (৭৯.৭৬%)
বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত গোপালগঞ্জ জেলা ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত।জেলার আয়তন ১৪৬৮.৭৪ বর্গ কি.মি।জনসংখ্যা প্রায় ১৩ লক্ষ।
এর উপজেলার সংখ্যা ৫ টি,পৌরসভা ৪ টি,ইউনিয়ন ৬৮ টি,গ্রাম ৮৮৯ টি।
গোপালগঞ্জ অঞ্চলটি মাকিমপুর স্টেটের জমিদার রাণী রাসমনির দায়িত্বে ছিলো।রাণী রাসমতির নাতির নাম ছিলো গোপাল।তার নামানুসারেই এলাকাটির নাম গোপালগঞ্জ রাখা হয়।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী হিন্দু ধর্মাবলম্বী বাস করে গোপালগঞ্জে।
গোপালগঞ্জে শিক্ষার হার ৭৯.৭৬%।এরমধ্যে পুরুষ ৮১.৬০%,নারী ৭৮.০১%।
জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৮৬২ টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯৯ টি,মাদ্রাসা ৪৪ টি,স্কুল & কলেজ ৯ টি,মেডিকেল কলেজ ১ টি,বিশ্ববিদ্যালয় ১ টি,কারিগরি কলেজ ৫ টি,নার্সিং কলেজ ১ টি,টেক্সটাইল কলেজ ১ টি,হোমিওপ্যাথিক কলেজ ১ টি,আইন কলেজ ১ টি,টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ১ টি,কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ২ টি,পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ২ টি।
এটিও পড়তে পারেনঃ বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে যে স্তন্যপায়ী প্রাণীগুলো!!পর্ব-২
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (বাংলাদেশের জাতির জনক),শেখ হামিনা (সাবেক প্রধানমন্ত্রী),জামিল উদ্দিন আহমেদ (বীরউত্তম),শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর (মতুয়া ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা),রমেশচন্দ্র মজুমদার (ইতিহাসবিদ),সুকান্ত ভট্টাচার্য (কবি),রকিবুল ইসলাম (সাবেক ক্রিকেটার),ফিরোজা বেগম (সংগীতশিল্পী),জযা আহসান (অভিনেত্রী),শাকিব খান (অভিনেতা),কাজী হায়াৎ (চলচ্চিত্রকার),এস এম ইমদাদুল হক (বীরউত্তম),হেমায়েত উদ্দিন(বীরবিক্রম),মোক্তার আলী (বীরপ্রতীক),চৌধুরী জাফর উল্লাহ শারাফাত (ধারাভাষ্যকার),স্যামসন এইচ চৌধুরী (স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা),মারজুক রাসেল (গীতিকার) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তথ্যসূত্র:
১.https://banbeis.gov.bd/site/page/15ca3c67-f953-4fef-aab3-67fa572c0366/%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE
২.https://sid.gov.bd/
৩.https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/mezpachglb#amp_tf=From%20%251%24s&aoh=17277320224816&referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com&share=https%3A%2F%2Fwww.prothomalo.com%2Fbangladesh%2Fdistrict%2Fmezpachglb
৪.https://shorturl.at/F7HDV
৫.https://www.gopalganj.gov.bd/
৬.https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE
৭.https://www.bagerhat.gov.bd/
৮.https://bbs.gov.bd/site/page/47856ad0-7e1c-4aab-bd78-892733bc06eb/-
৯.https://www.barguna.gov.bd/
১০.https://www.jhalakathi.gov.bd/
১১.https://dpe.feni.gov.bd/
১২.https://www.chittagong.gov.bd/
১৩.https://www.dhaka.gov.bd/
১৪.https://www.pirojpur.gov.bd/
১৫.https://bn.m.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0_%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE