একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা।যোগাযোগব্যবস্থা সহজতর করতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ।এখানে জালের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্রায় ৪০৫ টি নদ-নদী।তাই দেশের নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থায় নদ-নদী অন্যতম অন্তরায়।এ সমস্যা সমাধানে নদীর দুতীরকে সংযুক্ত করতে সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
বাংলাদেশে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮ হাজারের অধিক সেতু রয়েছে।
চলুন আজ জেনে নেই দেশের দীর্ঘতম দশটি সেতু সম্পর্কে।
১.পদ্মাসেতুঃ
স্থাপত্যকলার এক অনন্য বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সেতু হল পদ্মাসেতু।পানিপ্রবাহের দিক দিয়ে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম নদী পদ্মার উপর অবস্থিত সেতুটি একপ্রান্তে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া এবং অপরপ্রান্তে শরীয়তপুরের জাজিরাকে সংযুক্ত করেছে।
দ্বিতল সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কি.মি ও প্রস্থ ২৮.১০ মিটার;যার উপর দিয়ে যানবাহন ও নিচ দিয়ে ট্রেন চলাচল করে।সড়কটি চারলেনের হলেও রেলের লেন ১ টি।
এর সর্বোচ্চ পাইলিং গভীরতা ১২৮ মিটার,যা বিশ্বের সবচেয়ে গভীরতম সেতু পাইলিং হিসেবে গিনিস বুকে স্থান পেয়েছে।তবে পায়রা সেতুতে সম্প্রতি ১৩০ মিটার গভীরতায় ৪০ টি পাইলিং করা হয়েছে,যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ।
পদ্মাসেতুর পিলার সংখ্যা ৪২ টি,স্প্যান ৪১ টি।স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার।পানি থেকে সেতুটি ১৮.৩ মিটার(৬০ ফুট) উঁচুতে অবস্থিত।
সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে,যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ২০২২ সালে।
২.রূপসা রেলসেতুঃ
দেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু রূপসা রেলসেতু।এর দৈঘ্য ৫.১৩ কি.মি,প্রস্থ গড়ে ৬ মিটার।রেলসেতু বিবেচনায় এটি দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু।
রূপসা নদীর উপর অবস্থিত সেতুটি একপ্রান্তে বাগেরহাটের মংলা এবং অপরপ্রান্তে খুলনার বাটিয়াঘাটাকে সংযুক্ত করেছে।
নদীর মধ্যে থাকা মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৭১৬.৮ মিটার,প্রস্থ ৬.৬ মিটার।মাটির উপরে থাকা এপ্রোচ সেতুর দৈর্ঘ্য ৪৪১৩ মিটার,প্রস্থ ৬.৬ মিটার।
এর পিলার সংখ্যা ১৩৬ টি,স্প্যান সংখ্যাও ১৩৬ টি।মূলসেতুর উপর ৭ টি স্প্যান বসানো হয়েছে,যার দৈর্ঘ্য ১০২ মিটার।এপ্রোচ ব্রিজে মোট ১২৯ টি স্প্যান বসানো,যার গড় দৈর্ঘ্য ৩২.৫ মিটার।
সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে,শেষ হয়েছে ২০২২ সালে।তবে এখনও রেল চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের নদ-নদী সম্পর্কিত অজানা কিছু তথ্য।
৩.যমুনা সেতুঃ
যমুনা নদীর উপর অবস্থিত সেতুটি একপাশে সিরাজগঞ্জ ও অপরপাশে টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরকে সংযুক্ত করেছে।সেতুটির দৈর্ঘ্য ৪.৯৮৭ কি.মি,প্রস্থ ১৮.৫ মিটার।
প্রথমে শুধু যানবাহন চলাচলের জন্য তৈরি করা হলেও পরে সেতুর একপাশে রেল চলাচলের জন্য লাইন স্থাপন করা হয়।সড়কটি চারলেনের হলেও রেললাইনটি এক লেনের।
১৯৪৯ সালে সর্বপ্রথম মাওলানা ভাসানী সেতুটি স্থাপনের দাবি করেন।তবে এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯৯৪ সালে,যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ১৯৯৮ সালে।
সেতুটির গড় পাইলিং গভীরতা ৮৩ মিটার।পিলার সংখ্যা ৫০ টি,স্প্যান ৪৯ টি।স্প্যানের দৈর্ঘ্য ৯৯ মিটার।
যমুনা সেতুর ফলে উত্তরবঙ্গের সাথে ঢাকার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।
৪.যমুনা রেলসেতুঃ
অতিরিক্ত যানবাহন ও রেল চলাচলের জন্য ২০০৮ সালে যমুনা সেতুতে ফাটল দেখা দেয়।ফলে রেল চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যমুনা নদীর ৩০০ মিটার উজানে পৃথক রেল সেতু স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়।
রেল সেতুটির দৈর্ঘ্য ৪.৮ কি.মি,লাইনের সংখ্যা ২ টি।পিলার রয়েছে ৫০ টি,স্প্যান সংখ্যা ৪৯ টি।স্প্যানের দৈর্ঘ্য ৯৯ মিটার।
সেতুটি এখনও নির্মাণাধীন।এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে,চালু হওয়ার সম্ভাবনা আছে ২০২৫ সালে।
বর্তমানে যমুনা সেতু দিয়ে ৩৮ টি ট্রেন ১৫-২০ কি.মি/ঘন্টায় চলাচল করতে পারে।সেতুটি চালু হলে এটি দিয়ে দৈনিক ৮৮ টি ট্রেন ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২৫০ কি.মি বেগে চলতে পারবে।
৫.হার্ডিঞ্জ রেলসেতুঃ
পদ্মার উপর অবস্থিত দেশের প্রাচীন রেলসেতুটির দৈর্ঘ্য ১.৮১০ কি.মি।এর লাইন সংখ্যা ২ টি,পিলার সংখ্যা ১৬ টি,স্প্যান ১৫ টি।স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১০৫ মিটার।এছাড়া ভুমিতে দুপাশে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যর আরও ৬ টি স্প্যান আছে।
একপাশে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা এবং অপরপাশে পাবনার পাকশীকে সংযুক্তকারী সেতুটি স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয় ১৮৮৯ সালে।নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯১০ সালে,রেল চলাচল শুরু হয় ১৯১৫ সালে।নির্মাণ ব্যায় ছিলো ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।কলকাতার সাথে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ সহজ করতে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
তৎকালীন সময়ের স্থাপত্যশিল্পের এক বিস্ময় ছিলো সেতুটি।এর পাইলিং গভীরতা ৫০ মিটার,যা সেসময়ের যেকোনো সেতুর মধ্যে সর্বোচ্চ।এর অনন্য ডিজাইনের জন্য সেতুটির ইঞ্জিনিয়ার আলেক্সান্ডার রেন্ডেলকে স্যার উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
১৯৭১ সালে বোমা হামলায় সেতুটির ১২ তম স্প্যানটি ধ্বংস হয়ে যায়।পরবর্তীতে ভারতীয় রেলওয়ের সহায়তায় এটিকে পুনঃনির্মাণ করা হয়।
আরও পড়ুনঃ একনজরে পদ্মাসেতু সম্পর্কিত সকল তথ্য।
৬.লালনশাহ সেতুঃ
বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ দীর্ঘতম সেতুটি হার্ডিঞ্জ রেলসেতুর ভাটিতে পদ্মার উপর অবস্থিত।চারলেন বিশিষ্ট সড়কসেতুটির দৈর্ঘ্য ১.৭৮৬ কি.মি,প্রস্থ ১৮.১ মিটার।
এর পিলার সংখ্যা ১৮ টি,স্প্যান ১৭ টি।স্প্যানের গড় দৈর্ঘ্য ১০৯ মিটার।
২০০৩ সালে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়ে মাত্র ১ বছরের মাথায় ২০০৪ সালের জুনে নির্মাণ শেষ হয় ও যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সেতুটির অবদান অপরিসীম।
সেতুটি মংলা বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের সাথে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের যোগাযোগ সহজতর করেছে।
৭.মুক্তারপুর সেতুঃ
ধলেশ্বরী নদীর উপর অবস্থিত সেতুটি ৬ষ্ঠ চীন-মৈত্রী সেতু হিসেবেও পরিচিত।১.৫২১ কি.মি দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার প্রস্থবিশিষ্ট দুই লেনের মুক্তারপুর সেতু মুন্সিগঞ্জের দুইপ্রান্তকে সংযুক্ত করেছে।এটি নদী থেকে ১৮.৩০ মিটার(৬০ ফুট) উঁচুতে অবস্থিত।
সেতুতে পিলার সংখ্যা ৩৬ টি,স্প্যান ৩৭ টি।স্প্যানের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ১০০ মিটার।
সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৫ সালে,যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় ২০০৮ সালে।
মুন্সিগঞ্জ ও তার আশেপাশের জেলা থেকে ঢাকায় সবজি ও বিভিন্ন কৃষিপণ্য সহজে পরিবহনে সেতুটির গুরুত্ব অপরিসীম।
৮. বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুঃ
৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুটি পিরোজপুরের কচা নদীর উপর অবস্থিত।১.৪৯৩ কি.মি দীর্ঘ সেতুটির এর একপ্রান্তে রয়েছে পিরোজপুর সদরের নলবুনিয়া,অপরপ্রান্তে কাউখালির বেকুটিয়া।
সেতুটির প্রস্থ ১৩.৪ মিটার এবং পানি থেকে উচ্চতা ১৮.২৯ মিটার(৬০ ফুট)। পিলার সংখ্যা ৮ টি।স্প্যান রয়েছে ৯ টি,এরমধ্যে ৭ টির দৈর্ঘ্য ১২২ মিটার,বকি ২ টির ৭২ মিটার।
সেতুটির নির্মাণ শুরু হয় ২০১৮ সালে,যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ২০২২ সালে।
সেতুটি খুলনার সাথে বরিশাল বিভাগকে,মংলা বন্দরের সাথে পায়রা বন্দরের সংযোগ স্থাপন করেছে।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বের দীর্ঘতম দশটি নদীর তালিকা।
৯.পায়রা সেতুঃ
পায়রা নদীতে অবস্থিত বরিশালের বাকেরগঞ্জ ও পটুয়াখালীর লেবুখালী এলাকার যুক্ত করা পায়রা সেতুর দৈর্ঘ্য ১.৪৭০ কি.মি।৪ লেনবিশিষ্ট সেতুর প্রস্থ ১৯.৭৬ মিটার।
সেতুটির পিলার সংখ্যা ৩১ টি,স্প্যান রয়েছে ৩২ টি।
সেতুটির কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে।এর ৪০ টি পাইলিং করা হয়েছে ১৩০ মিটার গভীরতায়,যা সেতু হিসেবে বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ।(পদ্মাসেতুর সর্বোচ্চ পাইলিং ১২৮ মিটার)।
পায়রা বন্দরের বড় বড় জাহাজ নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য মূল নদীর মধ্যে মাত্র একটি পিলার বসানো হয়েছে।নদীর মধ্যে থাকা দুটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য রাখা হয়েছে ২০০ মিটার,যা বাংলাদেশের সেতুগুলোর মধ্যে দীর্ঘতম।পানি থেকে সেতুটির উচ্চতা রাখা হয়েছে ১৮.৩০ মিটার (৬০ ফুট)।
এটি দেশের প্রথম সেতু যাতে “ব্রিজ হেলথ মনিটর সিস্টেম” লাগানো হয়েছে।
সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে,যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ২০২১ সালে।
১০.দ্বিতীয় গোমতি সেতুঃ
চারলেনবিশিষ্ট সেতুটির দৈর্ঘ্য ১.৪১০ কি.মি,প্রস্থ ১৭.৭৫ মিটার।পিলার সংখ্যা ১৬ টি,স্প্যান রয়েছে ১৭ টি।নদীর মধ্যে থাকা ১৫ টি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ৮৭ মিটার,বাকি দুটি ৫২ মিটার।।পাইলিং দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার।
২য় গোমতি সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে,যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় ২০১৯ সালে।
এটি অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থিত।সেতুটি উদ্বোধনের পর মহাসড়কের যানজট অনেকটা কমে এসেছে।
তথ্যসূত্রঃ
১.http://www.padmabridge.gov.bd/
২.http://www.bba.gov.bd/site/page/e938dadf-914c-4635-8f4c-1aa2316f3d6b/%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A7%81-%E0%A6%B8
৩.https://www.dailynayadiganta.com/last-page/471540/%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%98%E0%A6%A4%E0%A6%AE-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%AF%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%81
৪.https://www.prothomalo.com/bangladesh/%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A7%9F-%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A6%A4%E0%A7%80-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%81-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%9A%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%81%E
৫.http://bba.gov.bd/site/page/9e9fafda-9f57-48b8-a49f-cb4d09c5843f/Mukterpur-Bridge
৬.https://bangladeshpost.net/posts/a-new-break-for-dev-71446
৭.https://www.newagebd.net/article/174981/rupsha-rail-bridge-in-khulna-completed-under-indias-loc
৮.https://www.lrbtravelteam.com/pakshi-harding-bridge-pabna/
৯.https://www.researchgate.net/publication/281234845_Design_construction_and_maintenance_of_bridges_in_Bangladesh_In_the_past_present_and_future
১০.https://www.jugantor.com/todays-paper/bangla-face/508020/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%89%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%81-%E0%A6%A6%E0%A7%83%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8